ভেরনারের চোটে কাতারে ধাক্কা, তবে ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে শিরোপার স্বপ্নে বিভোর জার্মানি

আন্তর্জাতিক

বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে বড়সড় ধাক্কা খেল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গোড়ালির গুরুতর চোটের কারণে কাতার বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না জার্মানির তারকা স্ট্রাইকার টিমো ভেরনারকে। মহাযজ্ঞ শুরু হতে যখন মাত্র ১৬ দিন বাকি, তখনই এল এই দুঃসংবাদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শাখতার দোনেৎস্কের বিপক্ষে লাইপজিগের ৪-০ গোলে জয়ের ম্যাচটিতেই কপাল পুড়েছে ভেরনারের। ম্যাচের প্রথমার্ধে গোড়ালিতে চোট পাওয়ার পর আর মাঠে নামতে পারেননি তিনি।

পরবর্তীতে লাইপজিগ ক্লাবের এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয় যে, ২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের পক্ষে চলতি বছরে আর মাঠে ফেরা সম্ভব নয়। কোচ হান্স ফ্লিকের অধীনে জার্মানির আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান অস্ত্র ছিলেন ভেরনার। ২০১৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর ৫৫ ম্যাচে ২৪ গোল করা এই স্ট্রাইকারকে না পাওয়াটা দলের জন্য নিঃসন্দেহে বিশাল ক্ষতির কারণ। স্পেন, কোস্টারিকা ও জাপানের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ‘ই’ গ্রুপে লড়াইয়ের আগে ভেরনারের অনুপস্থিতি জার্মানির আক্রমণের ধার অনেকটাই কমিয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ম্যাক্স এবার্লের আশাবাদ

এদিকে, অতীত এবং বর্তমানের চোট সমস্যা বা দলীয় পারফরম্যান্সের চড়াই-উতরাই সত্ত্বেও জার্মান ফুটবল কর্তারা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন বেশ ইতিবাচকভাবেই। বিশেষ করে বায়ার্ন মিউনিখের বোর্ড মেম্বার (স্পোর্ট) ম্যাক্স এবার্ল ২০২৬ সালে উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে জার্মানির শিরোপা জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী।

সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বিরতির পর জার্মান দলের পারফরম্যান্স দেখে এবার্লের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। বায়ার্ন পডকাস্টের এক আলোচনায় তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দলের বর্তমান কাঠামো ঠিক থাকলে জার্মানি অবশ্যই শিরোপার দাবিদার হতে পারে। এবার্লের মতে, “যদি আমাদের বায়ার্ন খেলোয়াড়দের ভিত্তিটা মজবুত থাকে, জামাল মুসিয়ালা ফিরে আসে, ফ্লোরিয়ান ভার্টজ তার সেরা ছন্দে থাকে এবং নিক ওল্টেমাদে নিজেকে আক্রমণভাগে আরও বিকশিত করতে পারে, তবে শিরোপার লড়াইয়ে আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনো কারণ দেখি না।”

জুলিয়ান নাগেলসম্যানের কৌশল ও প্রতিপক্ষ বিশ্লেষণ

অবশ্য বাস্তবতা মেনে নিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি বায়ার্ন কর্তা। তার মতে, শিরোপার দৌড়ে ফ্রান্স এখনো হট ফেভারিট। এছাড়া ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে তাদেরও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মানছেন তিনি। কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যানের অধীনে ‘ডাই ম্যানশ্যাফট’ আগের চেয়ে অনেক বেশি গুছিয়ে খেলছে। তবে স্পেন বা ফ্রান্সের মতো দলগুলোর তুলনায় জার্মানি এখনো কিছুটা পিছিয়ে আছে বলে মনে হতে পারে।

তবুও ফুটবল অনিশ্চয়তার খেলা। দল যদি ধারাবাহিক উন্নতি বজায় রাখতে পারে, তবে এবার্লের এই আশাবাদ বাস্তবে রূপ নেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। ভেরনারের মতো তারকাদের ইনজুরির ধকল কাটিয়ে তরুণ প্রতিভাদের কাঁধে ভর করে জার্মানি বিশ্বমঞ্চে আবারও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।