মতামত

সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা ছোলা একটি উচ্চমাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যা সেদ্ধ বা তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। তবে কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে, খোসা ছাড়িয়ে, এবং আদার সঙ্গে খেলে শরীরের জন্য আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিক একসাথে পাওয়া যায়। প্রোটিন শক্তি ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক, আর অ্যান্টিবায়োটিক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ছোলায় জ্বর নিরাময়েরও ক্ষমতা আছে এবং কাঁচা ছোলার ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা বেশি কার্যকরী। পানিতে ভেজানো ছোলায় ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশি থাকে, যা বেরিবেরি, মস্তিষ্কের গোলযোগ, এবং হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে। ছোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সিও থাকে, যা ঝাল, তেল, মসলাযুক্ত ছোলার তুলনায় কাঁচা অবস্থায় বেশি পুষ্টিকর।

রান্না করার সময় ছোলায় যত কম তেল ও মসলা ব্যবহার করা যায়, ততই তা শরীরের জন্য ভালো। ছোলা কৃমিনাশক হিসেবেও কাজ করে, বিশেষ করে ভিনেগারে সারারাত ভিজিয়ে খালি পেটে সকালে খেলে কৃমি দূর হয়। এছাড়া যৌনশক্তি বৃদ্ধিতেও ছোলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শুকনা ছোলা ভেজে খেলে শ্বাসনালীর জমে থাকা পুরনো কাশি বা কফ পরিষ্কার হয়।

ছোলা বা বুটের শাকও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই শুধু রমজান মাসেই নয়, সারা বছরই এটি খাবারের অংশ হতে পারে।

সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা:

১. ডায়াবেটিসে সহায়ক: ১০০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১৭ গ্রাম প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা, এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। ছোলার শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। ছোলায় ক্যালসিয়াম, লৌহ, এবং বিভিন্ন ভিটামিন থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে।

২. যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে: যৌনশক্তি বাড়াতে ছোলার ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শুকনা ছোলা ভাজা শ্বাসনালীর জমে থাকা কাশি ও কফ পরিষ্কার করতে সহায়ক। ছোলার শাকেও প্রচুর আঁশ থাকে, যা হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ছোলায় ভালো পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

৪. মেরুদণ্ডের ব্যথা দূর করতে: ছোলায় পর্যাপ্ত ভিটামিন বি থাকে, যা মেরুদণ্ডের ব্যথা ও স্নায়ুর দুর্বলতা কমাতে সহায়ক।

৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে: কোরিয়ান গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড গ্রহণের মাধ্যমে কোলন ও রেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যায়। এছাড়া এটি অ্যালার্জি ও অ্যাজমার প্রকোপও হ্রাস করে।