মতামত

আয়কর রিটার্ন দাখিল: কখন, কীভাবে, এবং কারা জমা দিবেন

আয়কর বা ইনকাম ট্যাক্স হলো একটি বাধ্যতামূলক অর্থ যা ব্যক্তিগত আয় বা প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের উপর আরোপিত হয়। এই কর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য সংগ্রহ করা হয়। আয়কর রিটার্ন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে করদাতা তার বার্ষিক আয়, ব্যয় এবং সম্পদের তথ্য প্রদান করেন কর কর্তৃপক্ষের কাছে। এই রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে করদাতার করযোগ্য আয়ের হিসাব নির্ধারণ করা হয়।

কারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন?

দুই ধরণের ব্যক্তিকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে:

১. যাদের করযোগ্য আয়, মুনাফা বা লাভ রয়েছে। ২. এমন ব্যক্তিবর্গ যাদের আয় থাকুক বা না থাকুক, আয়কর নির্দেশিকা ২০২১-২২ অনুযায়ী ২২ প্রকারের ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

কত আয় হলে আয়কর দিতে হবে?

নির্দিষ্ট আয়ের সীমার ওপর ভিত্তি করে আয়কর দিতে হয়:

  • পুরুষ করদাতার আয় যদি বছরে ৩ লাখ টাকার বেশি হয়।
  • মহিলা, তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হয়।
  • যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় বছরে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হলে।
  • প্রতিবন্ধী করদাতার আয় বছরে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে।

এই আয়ের সীমার মধ্যে কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না, তবে শূন্য রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আয়কর রিটার্ন দাখিল মানেই সবসময় কর পরিশোধ নয়; যদি আয় করসীমার ওপর থাকে তবে নির্ধারিত হারে কর দিতে হবে।

কখন আয়কর রিটার্ন জমা দিবেন?

করদাতাকে নির্দিষ্ট কর দিবসের মধ্যে তার আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। ২০২১-২২ কর বছরের জন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার সর্বশেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর ২০২১। সাধারণত, রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়কাল ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হয়।

কোথায় আয়কর রিটার্ন জমা দিবেন?

প্রত্যেক শ্রেণির করদাতার জন্য নির্দিষ্ট আয়কর সার্কেল আছে যেখানে রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। দেশের ৩১টি কর অঞ্চলে ৬৪৯টি সার্কেলে এই রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। পুরোনো করদাতারা তাদের পূর্বের সার্কেলে রিটার্ন জমা দিবেন, আর নতুন করদাতারা তাদের নাম, চাকরির স্থান বা ব্যবসার ঠিকানার ভিত্তিতে সার্কেল নির্ধারণ করে রিটার্ন জমা দেবেন। এছাড়াও প্রয়োজন হলে নিকটস্থ আয়কর অফিস বা কর পরামর্শ কেন্দ্র থেকে সহায়তা নেওয়া যায়।

কীভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন?

আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রতিটি করদাতার জন্য নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হবে। এটি নিজে জমা দেওয়া সম্ভব, তবে কোনো আইনজীবী বা আয়কর বিশেষজ্ঞের সহায়তায় রিটার্ন দাখিলের কাজটি আরও সহজ ও নির্ভুলভাবে করা যায়।